ডিজিটাল মার্কেটিং হল সোশ্যাল মিডিয়া, এসইও, ইমেইল এবং মোবাইল আ্যাপের মতো চ্যানেলের মাধ্যমে প্রডাক্ট ও সার্ভিস সেল এর  কাজ।৷ মূলত, ডিজিটাল মার্কেটিং হল মার্কেটিং এর যে কোন ফর্ম যা ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলির সাথে জড়িত। ডিজিটাল মার্কেটিং মানে অনলাইনে পন্য বা সাতিসের বিজ্ঞাপন প্রচার করাকেই বুঝায়। এখন সেটা হতে পারে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে, হতে পারে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এর মাধ্যমে, হতে পারে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের মাধ্যমে, আবার হতে পারে ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে। বর্তমানে বিজনেস প্রমোশনের সবথেকে বড় ও উন্নত মাধ্যমটির নাম হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং।

কেন আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং করাবেন?

ডিজিটাল মার্কেটিং কেন দরকার? এই প্রশ্নের উত্তর দেবার আগে আমি আপনাকে কিছু জিজ্ঞাসা করতে চাই – আপনি যখন টিতি দেখেন, মনে করুন তখন বাচ্চাদের ডাইপারের বিজ্ঞাপন আপনাকে দেখাচ্ছে, এভাবে অনেক বিজ্ঞাপন দেখাচ্ছে সেগুলো অনেকগুলোই আপনার জন্য হয়ত জরুরী নয়। কারণ যেই বিজ্ঞাপনগুলো আপনাকেসহ অনেককে দেখানো হচ্ছে, সেগুলো কোন কাজে আসছে না- কারণ টিভি চ্যানেল এর বিজ্ঞাপনদাতারাও জানেনা যে আসলে টিভি টা দেখছে তার আসলেই সেগুলো প্রয়োজন আছে কিনা?

ধরুন আপনি অবিবাহিত একজন ব্যাক্তি এবং আপনার বাসায় কোন বাচ্চাও নেই, আপনার সামনে যদি বাচ্চাদের ডাইপারের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় তাহলে ওই বিজ্ঞাপন দেখে আপনি কি আসলে কিনবেন?

তাতে ওই কোম্পানির বিজ্ঞাপন দিয়ে আসলে কি অনেক লাত হয়?

আমি জানি আসলেই এতাবে ট্রেডিশনাল বিজ্ঞাপন দিয়ে খুব বেশি লাত হয় না।

অন্যদিকে দেখুন, আপনি ইউটিউবে একটা ভিডিও দেখছেন কিতাবে হালিম তৈরি করা যায়, এবং ভিডিও দেখার মাঝেই একটা বিজ্ঞাপন চলে আসলো হালিমের এর জন্য বেষ্ট মশলা মিক্কা কোনটা বা হালিম তৈরি করার জন্য কোথা থেকে আপনি এর জন্য জিনিসপত্র কিনতে পারেন। এখন, তাহলে এই বিজ্ঞাপনটা হয়ত আপনার কাজে লাগবে এবং এখান থেকে আপনি কি ওই পণ্য কিনতে আগ্রহী হবেন? আমি জানি অবশ্যই আপনি আমার সাথে একমত হবেন এবং অবশ্যই এই বিজ্ঞাপন থেকে ওই কোম্পানির পণ্য বিক্রি হবে। আমার মনে হয় আপনি বুঝতে পেরেছেন আমি কি বোঝাতে চাচ্ছি।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে আমরা আমাদের পণ্যের জন্য টার্গেটেড কাষ্টমার খুব সহজে খুঁজে পেতে পারি এবং এখানে খরচও তুলনামূলক ভাবে অনেক কম।

এর পর ও যদি আপনার মনে প্রশ্ন জাগে যে, ডিজিটাল মার্কেটিং কেন করবো। তাহলে বলি বর্তমানে অনেক স্মার্ট ডিভাইস যেমন- এন্ড্রোয়েড স্মার্ট ফোনের চাহিদা খুব বেশি। বর্তমানে পৃথিবীর ৪৫০ কোটির বেশি মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করছে এবং আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে পৃথিবীর দুই তৃতীয়াংশ মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করবে৷ মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্নবিত্ত শ্রেনীর মানুষরা পর্যন্ত সবাই এন্ড্রোয়েড স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে থাকেন। তাই জন্য গুগল, পিন্টারেষ্ট,ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব, টুইটার এর ব্যবহার কারীর সংখ্যা অনেক বেশি। এসব মাধ্যম ব্যবহার করে খুব সহজেই ডিজিটাল মার্কেটিং করা যায়। তাই কোম্পানি গুলি তাদের পণ্য গুলিকে অনলাইন এর মাধ্যমে বাজারজাত করতে শুরু করেছেন। আপনি জানলে অবাক হবেন যে, মাত্র এক সেকেন্ডে কয়েক মিলিয়ন মিলিয়ন কাষ্টমার এর কাছে পৌঁছে যাচ্ছে তাদের পণ্য গুলি। সেখান থেকে, যার যার চাহিদা অনুযায়ী তাদের পণ্য গুলি ঘরে বসে পাচ্ছেন কাঙ্থিত সকল পণ্য। যেখানে ঘরে বসে পণ্য ক্রয় বা বিক্রয় করা যায় সেখানে ক্লাসিক বা ট্রেডিশনাল মার্কেটিং এর জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং এর সাথে টিকে থাকা সমনে কষ্টকর ও খরোচে হয়ে যাবে। আর এটা আপনার ব্যবস্যার জন্য খুব ভালো কিছু না। তাই হয়ত আপনাকে খুব অল্প সময়ে বেশি কাষ্টোমার বা গ্রাহক পাওয়া যায় বলেই ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হবে, আর বলা যায় এ জন্যই ডিজিটাল মার্কেটিং করা প্রয়োজন।

 

ডিজিটাল মার্কেটিং অন্যান্য মার্কেটিং এর চাইতে কম খরছে দ্রুতার সাথে করা যায় বিধায় বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিশেষকরে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়িরা অল্প খরছে ডিজিটাল মার্কেটিং করার সুযোগ পায় বিধায় ডিজিটাল মার্কেটিং এর জনপ্রিয় তুমুল হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

 

আমাদের এই বর্তমান সময়ে ডিজিটাল মার্কেটিং একটি অপরিহার্য অংশ। কারণ অধিকাংশ মানুষ এখন যেকোন পণ্য ক্রয় করার আগে ইন্টারনেটে ওই পন্য সম্পর্কে জেনে বুঝে তারপর সে পণ্য ক্রয় করে। আর অনলাইনে মার্কেটিং (ডিজিটাল মার্কেটিং) করার মূল উদ্দেশ্য হল বিজনেসের অনলাইন প্রেজেন্টেশন এবং ব্র্যান্ডিং করা। অনলাইনে যদি আপনার সাভিস বা প্রোডাক্ট খুঁজে না পাওয়া যায় তাহলে আপনি কখনো আপনার বিজনেসের সঠিক কাস্টমার খুঁজে পাবেন না এবং ব্যবসায় সফল হতে পারবেন না। বর্তমান এই কম্পিটিটিভ ওয়ার্ল্ডে আপনার বিজনেস টিকিয়ে রাখতে হলে আপনাকে অবশ্যই ডিজিটাল মার্কেটিং এ গুরুত্ব দিতে হবে।

তাই আপনি যদি একজন শিল্পী, ডাক্তার, তারকা বা ব্যবসায়ী হন, তাহলে আপনার উচিত ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে নিজের বা নিজের ব্যবসাকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া। সমগ্র বিশ্বে মোট প্রায় ১৬৩ বিলিয়ন মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক আর ইন্টাগ্রাম প্রায় ২ বিলিয়নের উপরে মানুষ ব্যবহার করে৷ আর এই সংখ্যাটি নিয়মিতভাবে বেড়ে চলেছে। বর্তমান বিশ্বে মোট প্রায় ৫৫০ বিলিয়ন মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। আর বিশ্বে মোট প্রায় ৫.০৯ বিলিয়ন মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। আর এই সংখ্যা খুবই দ্রুত গতির সাথে বেড়ে চলেছে। এই ব্যবহারকারীর সংখ্যা যত বাড়বে ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রয়োজনীয়তাও বাড়বে। আর সেই সাথে আপনার অনলাইনে আপনার ব্যবসার পরিধি ও বাড়বে। একটা স্ট্যাটিসটিকের মাধ্যমে ইউজার সার্ভে রিপোর্ট উল্লেখ করেছে যে, প্রায় ৮৬% বিক্রেতা, মার্কেটার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে কাস্টমার ইনফরমেশন কালেক্ট করার জন্যে।

প্রতি মাসে গুগল ৮৯.৩ বিলিয়ন বারের ও বেশি বার মানুষ ভিজিট করে। ৪৬% ই-কমার্স কাস্টমার গুগলে সার্চ করে প্রোডাক্টের জন্য, তাদের পছন্দের ই-কমার্স ওয়েবসাইটে আসে। বিশ্বে প্রায় ৭২১% ক্রেতা তাদের প্রয়োজনীয় কেনাকাটা অনলাইন থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে করে থাকে। এই সংখ্যাটিও দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। ৭০% ক্রেতা যেকোন পণ্য কেনার আগে ইন্টানেটে সার্চ দিয়ে সেই পণ্য সম্পর্কে যাচাই বাছাই করেন। তারপর পণ্যটি পছন্দ হলে তার ঘরে বসেই অনলাইনে অর্ডার করে ফেলেন। আপনি হয়ত এখন কিছুটা হলেও বুঝতে পারছেন, আপনার ক্রেতারা কিভাবে অনলাইনে তাদের সাভিস বা কেনাকাটা সম্পন্ন করেন। তাই আপনি যদি এই ডিজিটাল যুগে, অনলাইনে, ডিজিটাল মার্কেটে টিকে থাকতে চান, তাহলে আপনার এখনই ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে ভাবা উচিত। আর এ ক্ষেত্রে আপনি যারা অনেক দিন ধরে ডিজিটাল মার্কেটিং সাভিস দিচ্ছি, তাদের সাথে নিশ্চিন্তে আপনার ব্যবসার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং করাতে পারেন।

আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ সফলতার সাথে এই সার্ভিস টি প্রদান করে আসছি। ডিজিটাল মার্কেটিং সার্ভিস এর জন্য যোগাযোগা করতে পারেন।

আপনার প্রতিদ্বন্থী কিন্তু বসে নেই, তার ব্যবসাকে ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে ক্রেতাদের কাছে পৌছে দেয়ার চেষ্টা করছেন প্রতিনিয়ত। তাই আপনাকেও সমানতালে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সব সেক্টরে মার্কেটিং করে যেতে হবে।  বড় বড় কোম্পানীগুলোও কিন্তু বেশ তোড়জোড়ের সাথেই বর্তমানে ডিজিটাল দুনিয়াতে নিজেদের অস্তিত্ব ভালোভাবেই জানান দিচ্ছে। আপনি যদি অনলাইনে ডিজিটাল মার্কেটিং না করেন, তাহলে আপনি যুগের তালে তাল না মিলাতে পেরে হারিয়ে যাবেন। যারা যুগের সাথে বদলাতে পারে না, যুগ তাদের পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়। তাই ক্রমাগত যুগের সাথে বদলাতে থাকুন। ডিজিটাল মার্কেটিং করুন৷ সাফল্যকে সাথে রাখুন, সময়ের সাথে থাকুন।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে আমরা আমাদের পণ্যের জন্য টার্গেটেড কাষ্টমার খুব সহজে খুঁজে পেতে পারি এবং এখানে খরচও তুলনামূলক তাবে অনেক কম। কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু করবেন? প্রথমত আপনার পণ্যটি কোন ক্যাটাগরির কাষ্টমারের কাছে চাহিদা সম্পূর্ণ তা বিবেচনা করে সে অনুযায়ী সঠিক তথ্য ও আকর্ষণীয় কনটেন্টের মাধ্যমে তুলে ধরতে হবে। পণ্যের ধরণ ও চাহিদান্যায়ী আপনাকে কনটেন্ট সাজাতে হবে। এবং এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে সেলস ফানেল তৈরি করা৷ আমার দেখা মতে বাংলাদেশ এর ৯৫% কোম্পানি তাদের পণ্য বিক্রি করার জন্য সেলস ফানেল তৈরি করেন না এবং যার কারণে তাদের সেলস তুলনামূলক তাবে অনেক কম হয়। আপনার সেলস ফানেল তৈরি করার পর চিন্তা করতে হবে কোন ডিজিটাল মাধ্যমকে ব্যবহার করে মার্কেটিং শুরু করবেন এবং সেই ডিজিটাল মাধ্যমটি সম্পর্কে আপনাকে তাল জ্ঞান রাখতে হবে। ডিজিটাল মার্কেটিং করার জন্য অনেকগুলো পদ্ধতি রয়েছে। আমরা সব সময় সব রকম পদ্ধতি নিয়ে সব প্রজেক্টে কাজ করি না কিন্তু এমন কিছু পদ্ধতি রয়েছে যেগুলো আমাদের ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে লাগবেই।

সর্বোমোট ক্লায়েন্ট
0 +
বর্তমান ক্লায়েন্ট
0 +
প্রজেক্ট বেজড ক্লায়েন্ট
0 +
সাবস্ক্রিপশন ক্লায়েন্ট
0 +
Scroll to Top